‘মন্দার’ ওয়েব সিরিজের মাধ্যমে পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য । পরিচালনায় যে তিনি কি পরিমাণ দক্ষ তা সেই মন্দারেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। এবার বড়পর্দায় পরিচালক হিসেবে নিজের উপস্থিতি বোঝালেন অনির্বাণ। ক্যামেরার সামনের মানুষ এবার ক্যামেরার পেছনে কেরামতি দেখালেন। ‘বল্লভপুরের রূপকথা’ ছবির মাধ্যমে বড়পর্দায় পরিচালক হিসেবে পদার্পণ করলেন অনির্বাণ। বাদল সরকারের কলমে লেখা এই নাটক। যদিও তিনি ফরাসি পরিচালক রেনে ক্লেয়ারের ইংরাজি ছবি ‘ঘোস্ট গোজ ওয়েস্ট’ থেকে কাহিনীর বীজ নিয়ে গল্পটি লিখেছিলেন। অনির্বাণ প্রায় সত্তর বছর পেরিয়ে সেই নাটকের চিত্রায়ণে বর্তমান সময়কেও ছুঁয়েছেন।
ছবি অনুযায়ী, ভেঙে পড়া বিশাল এক রাজবাড়ির তরুণ বংশধর ভূপতি রায় ‘বাহাদুর’-এর অবস্থা এখন ঘটি না ডোবা পুকুরের মতো। ৪০০ বছরের বাড়ি বিক্রি করে ধার-দেনা মিটিয়ে কলকাতায় একটা ওকালতির চেম্বার করতে পারলেই তার জীবন বর্তে যায়। কিন্তু অমন পুরনো বাড়ি কিনবে কে? রাজবাড়ির ঠাটবাট বজায় রেখে খদ্দের টানতে সে এক মতলব বের করে। বাড়ির পুরনো বৃদ্ধ চাকর মনোহরকে সাজায় খাস খানসামা। বন্ধু সঞ্জীবকে সাজায় নিজের এস্টেটের ম্যানেজার। উত্তমর্নদের ঋণ শোধের লোভ দেখিয়ে বাড়ির দারোয়ান, পাচক ইত্যাদি বানিয়ে এক এলাহি ব্যবস্থা করে ফেলে। হবু খদ্দের হয়ে হালদার দম্পতি তরুণী কন্যা ছন্দাকে নিয়ে রাজবাড়িতে এলে কেলেঙ্কারিয়াস পরিস্থিতি তৈরি
হয়। এরমধ্যেই আবার রায় বংশের এক পুরনো ভূত রঘু হাজির হয়ে জটিলতা বাড়ায়।
পরিচালক হিসেবে অনির্বাণের সেট নির্মাণ এক কথায় অসাধারণ। সৌমিক হালদারের ক্যামেরা সাদা-কালো এবং রঙিন হয়ে হাসি ও ভূতুড়ে পরিবেশ তৈরি করে। শুভদীপ গুহর আবহ চলতি ভাবনার ব্যতিক্রম। প্রথম কিছুক্ষণ একটু লাউড লাগলেও পরবর্তী সময়ে ঘটনার সঙ্গে সুন্দর সঙ্গত করেছে তাঁর ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর। অভিনয় প্রসঙ্গে বলতে হলে, কেউ কারো থেকে কম যান না। দক্ষতার সঙ্গে পর্দায় নিজেদের উপস্থিতি জানান দিয়ে গেছেন। অভিনেতাদের মধ্যে কয়েকজন চেনা মুখ থাকলেও সিংহভাগই অচেনা। তবে তা বোঝার উপায় নেই। প্রত্যেকের অভিনয়ই প্রশংসনীয়।
চলচ্চিত্র জগতের টাটকা খবর পেতে ফলো করুন
Follow Us On 👇
Tags: Ballavpurer Rupkatha, Anirban Bhattacharya, ballavpurer rupkaha bengali movie review
Post a Comment